ভোর ৪ টা বাজছে । গ্রামের চারপাশ টা নিরব নিঃস্তব্ধ
মসজিদ থেকে আযানের ধ্বনি ভেসে আসছে।তাজিম
জানালার পাশে বসে অশ্রুসিক্ত চোখ মুছছিল।একটা সময়
ছিল যখন তাঁর জিবনটা ছিল রঙিন।চোখে ছিল স্বপ্ন।
তাঁর জিবনে ছিল না, নামায কোরআন শুধু আলমারির
শেলফে রাখা বই। কিন্তু এখন সে নিয়মিত নামায পড়ছে
কোরআন তেলাওয়াত করছে।
তাজিম এখন তার হৃদয় টাকে পোড়াচ্ছিলো কেঁদে।গত বছর
তাঁর বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তারের কাছে
সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যান। কিন্তু ডাক্তার চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ
করতে পারেনি। তাজিম তাঁর বাবাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে
আসে।
তাজিম এক মসজিদের পাশে বসে কাঁদছিল।হঠাৎ এক বুড়ো
মসজিদের ইমাম তাঁর পাশে এসে বসল।বলল,বাবা তুমি
কাদছো কেন?তাজিম তখন ইমাম কে সব ঘটনা খুলে বলে।
ইমাম বলে বেটা, মানুষ অসহায়।কাউকে নিজের কষ্টের কথা
বলতে পারে না। তুমি নামায পড়ো । আল্লাহর কাছে দোয়া
কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমার দোয়া কবুল করবে।
সেদিন রাতেই তাজিম প্রথমবার সিজদায় কেঁদেছিল। তার
অন্তরে এক নতুন শক্তি জন্ম নিল। ধীরে ধীরে পাঁচ ওয়াক্ত
নামায তাঁর জীবনের অংশ হয়ে গেল। কুরআনের
আয়াতগুলো যেন অন্ধকার হৃদয়ে আলো জ্বেলে দিল।
আজ এক বছর পর, তার বাবা সুস্থ। ঘরে শান্তি ফিরেছে।
তানজিম গ্রামের যুবকদের নিয়ে মসজিদে দারস করায়,
কুরআন শেখায়। গ্রামের ছেলেমেয়েরা তার কথা শুনে
অনুপ্রাণিত হয়। একদিন তাঁর বন্ধু তাকে জিজ্ঞেস করল,
তুই কেন এতটা বদলে গেলি?
তাজিম মুচকি হেসে বলল, কারণ আমি শিখেছি, আল্লাহ
কে ভুলে গেলে পৃথিবীর সবকিছু থাকা সত্ত্বেও মানুষ অশান্ত
থাকে। আর আল্লাহকে স্মরণ করলে কষ্টের মাঝেও হৃদয়
প্রশান্ত হয়।দূরে আবার আযানের ধ্বনি ভেসে এলো।
তাজিমের চোখ ভিজে উঠল। এই ধ্বনি এখন তার জীবনের
সবচেয়ে প্রিয় সুর।আযানের সুর শুনে তাজিম আবার হাত
তুলে দোয়া করল হে আল্লাহ, আমাকে ও আমার পরিবারকে
হেদায়েতের পথে রাখো।
ভোরের আলো ধীরে ধীরে গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছিল। নতুন
দিনের সূচনা যেন নতুন জীবনের প্রতীক। বিশ্বাসের আলোয়
তাজিমের হৃদয় ভরে উঠল শান্তিতে,সুখে আর প্রশান্তিতে
বাবা -মা তাজিম কে নিয়ে গর্ববোধ করে।কারণ সে আল্লাহর
পথে হাঁটছে।
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক :মোঃ তানজিমুল ইসলাম
প্রধান উপদেষ্টা :মোঃ ইশতিয়াক আহাম্মেদ
সম্পাদিকা ও প্রকাশক : সারমিন আখি
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বপ্ন সাহিত্য পরিষদ ও স্বপ্ন ২৪